1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সংস্কৃতিনাইজেরিয়া

লাগোসের রাস্তাকে গ্যালারিতে রূপান্তর করছেন তারা

৯ মে ২০২৪

নাইজেরিয়ার শিল্পী ওলাইবি ওকাহ ও তার সংগঠন বুশম্যান কালেক্টিভের শিল্পীরা লাগোস শহরের ল্যান্ডস্কেপ বদলে দিচ্ছেন৷ সেখানকার ধূসর দেওয়ালগুলোতে প্রাণের সঞ্চার করছেন তারা৷

https://p.dw.com/p/4fgA3
লাগোস শহরের দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকছেন এক শিল্পী
শহরের ধূসর বর্ণ নানা রঙের ছোঁয়ায় বদলে দিচ্ছেন শিল্পীরাছবি: DW

ওলাইবি ওকাহ বলেন, ‘‘ম্যুরাল আঁকা শুরু করতে যে বিষয়টি আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে সেটি হচ্ছে, আমাদের কালচারাল ল্যান্ডস্কেপে এমন পরিবর্তন আনা, যেটা আমাদের নিজেদের ভিন্নভাবে দেখতে উৎসাহ জোগাবে৷ বুশম্যান কালেক্টিভের অন্যতম লক্ষ্য, বিভিন্ন দেওয়ালকে অর্থপূর্ণ শিল্পকর্মে ভরিয়ে দিতে ক্রিয়েটর ও আর্টিস্টদের উৎসাহিত করা, যে শিল্পকর্ম কমিউনিটি এবং সেখানে যারা বাস করেন তাদের কথা ফুটিয়ে তুলবে৷''

শহরজুড়ে ওলাইবির ম্যুরাল ও গ্রাফিতির দেখা পাওয়া যায়৷ মূল সড়ক থেকে শুরু করে লুকানো স্থান, সব জায়গায়৷ এই আরবান আর্ট কীভাবে লাগোসের ল্যান্ডস্কেপ বদলে দিয়েছে, এবং একই সময়ে শহরের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে জায়গা করে নিয়েছে?

ওলাইবি বলেন, ‘‘আমার সবসময় বিশ্বাস ছিল, আর্ট ভালো হলে সেটা পরিবর্তন আনতে পারে৷ আমি এটাকে সবসময় একধরনের অ্যাক্টিভিজম হিসেবে দেখেছি৷ সেই উপায়ে, যেভাবে আমরা মানুষেরা একে অপরের সাথে সূক্ষ্ম উপায়ে যোগাযোগ করতে পারি৷ এছাড়া এটা আমাদের কমিউনিটির সৌন্দর্য বাড়ায়৷''

নাইজেরিয়ার আরবান আর্ট দেশটির ঐতিহ্য থেকে অনুপ্রেরণা নেয়৷ উজ্জ্বল রং আর সাহসী আকারের দেখা পাওয়া যায়৷ লাগোস শহর নিজেই একটি আর্ট কেন্দ্র হয়ে উঠেছে৷ দিনের পিক সময়ে রাস্তার দুই দিকের প্রতিটিতে ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ১০ হাজার দর্শক থাকেন৷ এর অর্থ, বুশম্যান কালেক্টিভের শিল্পীদের কাজ অনেকেই দেখতে পান৷

ওলাইবি বলেন, ‘‘ম্যুরালের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, আমার ভালো লাগছে৷ যে উৎসাহ নিয়ে কাজ হচ্ছে, তাতেও আমি আনন্দিত৷ অনেকেই এখন নিজেদের জায়গায় শিল্পীদের কাজ করার সুযোগ দিচ্ছেন, যেটা আগে সম্ভব ছিল না৷ আমি বিশ্বাস করি আর্ট হলো মানুষের সৃজনশীল দক্ষতা ও কল্পনার সবচেয়ে বিশুদ্ধতম প্রকাশ৷''

লাগোসের চেহারা বদলে দিচ্ছে স্ট্রিট আর্ট

ওলাইবি ক্যানাডার টরন্টোতে শিল্পকলা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন৷ নিজের চারপাশের সবকিছু আঁকার মাধ্যমে আর্টিস্ট হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়েছিল৷ প্রচলিত গ্যালারির জন্য আঁকার সীমাবদ্ধতা থেকে স্বাধীন ছিলেন তিনি৷ ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেক কিছু দেখেছেন ওলাইবি৷ এরপর নাইজেরিয়ায় ফিরে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷ এমন সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না৷ একজন স্বাধীনচেতা শিল্পী হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে কঠিন কাজটি কী ছিল?

ওলাইবি বলেন, ‘‘একজন শিল্পী হিসেবে আমি শিল্পের বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করছি৷ আমার যা অভিজ্ঞতা হয়েছে তা হলো, অনেক বাধা৷ আর অনেকে আমাকে বলেছে যে, এটা কেমন হওয়া উচিত এবং আমার কোন চ্যানেল অনুসরণ করা উচিত৷ তাই আমি গ্যালারির বাইরের সবকিছুর উপর ফোকাস করে আমার কাজ নিয়ন্ত্রণ ও প্রচলিত নিয়ম ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷''

বুশম্যান কালেক্টিভের আরেক শিল্পী এস্থার ওবিউনি বলেন, ‘‘আমি কয়েকবছর ধরে বুশম্যান কালেক্টিভের সঙ্গে কাজ করছি৷ আমরা অনেক কাজ করেছি৷ স্টুডিওতে কাজ করেছি, যেটা স্বাভাবিক, পেইন্টিং, ম্যুরালও করেছি৷ এটা আমাদের করা একটি কাজ৷''

বুশম্যান কালেক্টিভের শিল্পীরা ঝুঁকি নিতে এবং কমিউনিটির কণ্ঠস্বর হওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত নিয়ম পরিবর্তনে আগ্রহী৷ যেমনটা মাকোকোর ক্ষেত্রে হয়েছে৷ লাগোসের এই এলাকায় ভাসমান বাড়ি রয়েছে৷

ওলাইবি বলেন, ‘‘কাজের জন্য টাকা না পেলেও আমরা রাস্তায় গিয়ে পেইন্ট করা শুরু করি কিংবা অনুপ্রেরণামূলক শব্দ লিখি৷ এটা এমন কিছু, যেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়৷ আর এর জন্য আমি চেষ্টা করি৷''

ছাউকে লুসান্ডা/জেডএইচ